থেমে যাই

জীবনের কী এক সময়ের অপেক্ষায় চেয়ে থাকি আকাশের দিকে। বিশাল আকাশও আমায় হাতছানি দিয়ে যায়-বসন্ত শেষেও যে বসন্তেরই ছোঁয়ায়। ডাক আসে রোদেলা দুপুরে হৈমন্তিদের। সেই দুপুরের রোদ গায়ে মেখে পা বাড়াবার সাহস হারাই কেবলই-পাছে ক্লান্তিরা এসে জুড়ে বসে! এ আমার ক্লান্তিই বটে! গেয়ে যাই তাই আনমনে-
ক্লান্তি আমায় ক্ষা করো প্রভু, পথে যদি পিছিয়ে, পিছিয়ে পড়ি কভূ...থেমে যাই, যেভাবে গেলাম থেমে। গানের সুরও আর আগের মতো মাতিয়ে যায়না। শুকনো গাছের ডালেরা যেভাবে-আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়-সেভাবেই হয়ত থাকি। কালের খেয়ায় ভেসে বেড়ানো সব আনন্দেরাও যেন পিছু হটে-মাঝে, মাঝে। ফের আসেও নিরবেই-দিয়ে যায় দোলাও। তবে সে দোল সাড়া জাগায় না। মরা ডালে বাতাস লাগলে যেমন-তেমনি। কী এক জীবন!
জীবন যেখানে থামে-সেখান থেকেই শুরু হয়। শুরু হয় পথচলা, সংগ্রামও। আজকাল বড্ড বিতিকিচ্ছিরি কী সব ভাবনায় জীবন এলোমোলো হয়ে যেতে যেতে থমকেও দাঁড়ায়। দাঁড়াই জীবন ও যৌবনের সিঁড়ির ঠিক মাঝখানে! এ আমার কেমন ভাবনা! কে জানে? সাদা-কালোরা কেবলই হাসে, হাসায়। রঙিনেরা ডানা মেলে উড়ে চলে
মহাশূন্যে। চেয়ে থাকি চাতকের ন্যায়। মরা ক্যকটাসেরাও মাঝে-মধ্যে হঠাৎ কেন যেন হো হো করে হেসে ওঠে-হাসায় বুনোদের। আমি জল-জ্যোৎন্সায় অবগাহনের পথ খুঁজে ফিরি। খুঁজতে গিয়ে এক সময় খেই হারিয়ে দাঁড়াই থমকে। থেমে যাই মাঝপথে। আমার এ থেমে যাওয়াতে বুনোদের লাভ-ক্ষতি মেলাতে ব্যস্ত দেখি উড়নচণ্ডিদের।
পাখিরা উড়ে যায় দিন শেষে, পড়ন্ত বিকেলের রোদ গায়ে মেখে নিঃশব্দেই। টুকটুকে লাল সূর্যটা চেয়ে চেয়ে দেখে ওদের চলে যাওয়ার মুহূর্ত্যটা। এক সময় নিজেও চলে যায়-মিশে যায় অন্ধকারে। আমি থেমে যাই সেই মাঝপথেই। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা হয়না আর। জল-জ্যোৎস্নায় স্নানের আকাঙ্কায় কেবলই স্বপ্ন বুনি। স্বপ্নেরাও হাসে-উঁকি মেরে হাতছানি দেয়। সাড়া দেয়ার ব্যর্থ  চেষ্টা করি। থেমে যাই পরক্ষণেই। কী এক জীবন!   

মন্তব্যসমূহ